
ভুবনেশ্বর নদ কুচুরিপানায় সয়লাব হয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছে। দখল-দূষণ ও কর্তৃপক্ষীয় তদারকি না থাকায় নদটি ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে।
উপজেলা সদরের একমাত্র নদের অতিত ঐতিহ্য আজ আর নেই। তবুও সংস্কারের নেই কোনো উদ্যোগ। এতে হারিয়ে গেছে নদীমাতৃক চরভদ্রাসনের আদি ঐতিহ্য। জানা যায়, ভুবেনশ্বর শাখা নদটি পার্শ্ববতী সদরপুর উপজেলার আকোটেরচর ইউনিয়নের পদ্মা নদী গর্ভ থেকে বের হয়ে উপজেলা পরিষদের সামনে দিয়ে বিভিন্ন গ্রাম ও ইউনিয়ন ভেদ করে জেলা শহর পর্যন্ত প্রায় ৩০ কি.মি. এলাকার জলমহল নিয়ে বিস্তৃত। আবহাওমান কাল ধরে ভুবেনশ্বর নদটি ছিল উপজেলাবাসীর বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন।
এ নদ দিয়ে ছোট বড় নৌকা চলাচল, লঞ্চে করে জেলা শহর সহ বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত করত এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর সারা বছরের মাছের অভাব পূরন, গোসলকার্য, সেচ ও কৃষি জমির উর্বরতা ফিরিয়ে দিত এ নদটি। এ ছাড়া বর্ষকালে নৌকা বাইচ, কলা গাছের ভ্যাইরা বাইচ ও সাঁতার প্রতিযোগীতা সহ বিনোদনের কেন্দ্রবিন্দু ছিল ওই নদ। কালের বিবর্তনে নদটির প্রায় সমস্ত এলাকা পলি মাটি পড়ে নাব্যতা হারিয়ে গেছে। বর্ষারতে কচুরীপানা ও তৃণলাদি ভেসে এসে ভরে যায় নদটি। ফলে নদটি এখন আর মানুষের কোনো কাজে আসছে না। এখন শুধু মশা, মাছি ও সর্প বিচরনের অভয়ারণ্যে পরিনত হয়েছে এ নদ।
অবশ্য, ২০১৯ সালে নদটি সচল করার জন্য উপজেলায় একটি নদী রক্ষা কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সে সময়ে ওই কমিটির উদ্যোগে নদটি সংস্কার, পরিস্কার ও খননের জন্য মানববন্ধন ও স্মারকলিপি পেশ সহ বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে সরকারের কাছে দাবী দাওয়া তুলে ধরা হয়েছিল।
নদটি ভরাট ও বিভিন্ন স্থানে নদের জমি দখল হয়ে যাওয়ায় এর অস্তিত্ব হারিয়ে যাচ্ছে। স্রোতধারা বন্ধ হওয়ায় স্থানে স্থানে পানি দূষিত হয়ে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ভূমিদস্যুরা দখল করে নিচ্ছে নদের হাজার হাজার একর সরকারি খাসজমি।
চরভদ্রাসন উপজেলার ভুবনেশ্বর নদটি উপজেলার প্রায় মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে।